প্রবাসী বা অভিবাসী শ্রমিক হতে করণীয়: Duties and Responsibilities to be Migrant Workers

🛫প্রবাসী বা অভিবাসী শ্রমিক বলতে কি বুঝায় তা নিচের আলোচনা থেকে আশা করি আপনারা স্পষ্ট ধারণা পাবেন । 

"যখন কোন ব্যক্তি কাজ করার উদ্দেশ্যে নিজ দেশের সীমানা অতিক্রম করে অন্য দেশে কাজের উদেশ্যে গমন করে তাকে প্রবাসী বা অভিবাসী শ্রমিক বলে ।"

১৯৭১ সালের ১৬ই ডিসেম্বর বাংলাদেশ পশ্চিম পাকিস্তানের নিকট থেকে চূড়ান্ত বিজয় অর্জন করে । স্বাধীনতার পর বাংলাদেশের জনসংখ্যা খুব দ্রুত বৃদ্ধি পেতে থাকে । অধিক জনসংখ্যা স্বাধীনতা পরবর্তী নির্বাচিত সরকারের নিকট একটি বড় চ্যালেঞ্জে পরিণত হয় । কর্মসংস্থানের অভাব ও বিভিন্ন প্রকৃতিক দুর্যোগ দেশের মানব সম্পদ ব্যবস্থাপনাকে অকার্যকর করে ফেলে । তাই শিক্ষিত, প্রশিক্ষিত ও দক্ষ মানব সম্পদ তৈরিতে ব্যর্থ হয় বাংলাদেশ । এমন পরিস্থিতিতেও মধ্যপ্রাচ্যের বিভিন্ন দেশ বাংলাদেশ থেকে শ্রমিক নিয়োগে আগ্রহ প্রকাশ করে । বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূতেরা বিভিন্ন দেশের সাথে কূটনৈতিক সম্পর্ক স্থাপন করে ও কূটনৈতিক সম্পর্ক শক্তিশালী করে শ্রমবাজার তৈরির পথ সুগম করে । শুরুতে মালয়শিয়া, সিঙ্গাপুর সহ বেশ কিছু দেশ বাংলাদেশ থেকে বিভিন্ন কাজে আধাদক্ষ শ্রমিক নিয়োগে আগ্রহ প্রকাশ করে । বাংলাদেশী প্রবাসী শ্রমিকদের কাজ ও আচরনে সন্তুষ্ট হয়ে বিভিন্ন দেশ আরো বেশি শ্রমিক নিয়োগে আগ্রহ প্রকাশ করে । আস্তে আস্তে ইউরোপের শ্রমবাজারও বাংলাদেশীদের জন্য উন্মুক্ত হতে থাকে । তবে দালাল ও সক্রিয় মানবপাচারকারী চক্রের কথায় প্রলুব্ধ হয়ে কম খরচের বিদেশে কর্মসংস্থানের আশায় অনেক বাংলাদেশি সাগর ও সীমান্ত পথে অবৈধভাবে বিভিন্ন দেশে প্রবেশের চেষ্টা করে । বিগত বছর গুলোতে অনেক অভিবাসন প্রত্যাশীর মৃত্যু হয় সাগরে ও সীমান্তে । অবৈধ অভিবাসন প্রতিরোধে বিভিন্ন দেশ সীমান্তে নজরদারি বৃদ্ধি করে ও অবৈধদের নিজ দেশে ফেরত পাঠাতে বিভিন্ন অভিযান পরিচালনা করে । বর্তমানে বিভিন্ন দেশ G2G প্রকল্পের আওতায় বাংলাদেশ থেকে দক্ষ ও প্রশিক্ষিত শ্রমিক নিয়োগ করছে । এছাড়াও বেসরকারি ভাবে বিভিন্ন সরকার অনুমদিত এজেন্সি নতুনদের প্রশিক্ষণ দিয়ে বিদেশে প্রেরণ করছে । বিশেষ করে বিগত বছর গুলোতে বাংলাদেশ সৌদি আরব, কাতার, কুয়েত, ইরাক, মালয়শিয়া, সিঙ্গাপুর, কোরিয়া, জাপান, বাহরাইন, জর্ডান, সার্বিয়া, রোমানিয়া, ইউরোপের বেশ কয়েকটি উন্নত দেশ সহ বিভিন্ন দেশের শ্রমবাজার দখলে নিতে সক্ষম হয়েছে । দিন দিন প্রবাসে বাংলাদেশীদের শ্রমবাজার প্রসারিত হচ্ছে । দক্ষ, শিক্ষিত, প্রশিক্ষিত ও পেশাদার শ্রমিক তৈরি করতে পারলে আশা করি আরো প্রবাসী বা অভিবাসী শ্রমিকের কর্মসংস্থান সৃষ্টি হবে সারা বিশ্বের বিভিন্ন দেশে । নিজেকে পড়ালেখার পাশাপাশি প্রশিক্ষিত করুন । কর্মসংস্থানের অভাব হবে না । সকল শ্রমিককে সম্মান করুন । নিজেকে সেবামূলক কাজে নিয়োজিত করুন ।

👍একজন আদর্শ প্রবাসী বা অভিবাসী শ্রমিক হতে করনীয়:

১. প্রতিষ্ঠানিক শিক্ষার পাশাপাশি কারিগরি শিক্ষা গ্রহণ করুন ।

২. নিজের জীবনের লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য ঠিক করুন ।

৩. শতশত কাজ ও পেশার মাঝ থেকে একটি কাজ বা পেশা বেছে নিন । প্রয়োজনে একজন বিজ্ঞ ব্যক্তির সাথে পরামর্শ করুন ।

৪. আপনাদের পছন্দ অনুযায়ী একটি স্বল্পমেয়াদী বা দীর্ঘমেয়াদি প্রশিক্ষণ কোর্স সম্পন্ন করুন । 

৫. বয়স ১৮-২৫ বছর হলে আপনার জাতীয় পরিচয়পত্র/জন্মনিবন্ধন, শিক্ষাগত যোগ্যতার সার্টিফিকেট বা প্রশিক্ষণ সার্টিফিকেটের তথ্যের সাথে মিল রেখে পাসপোর্টের জন্য আবেদন করুন । পাসপোর্ট আবেদন করার সময় অবশ্যই অভিজ্ঞ কারো পরামর্শ নিতে ভুলবেন না ।

৬. শিক্ষা ও প্রশিক্ষণ শেষ করে বছরের পর বছর বেকার বসে থাকবেন না । শিক্ষা ও প্রশিক্ষণের সাথে মিল রেখে যে কোন একটি কাজে যোগদান করুন । পাশাপাশি দেশে ও বিদেশে ভালো বেতনে চাকরির চেষ্টা করুন । বিদেশী জব সাইট গুলো ঘুরে দেখুন । প্রয়োজনে একজন ভালো কনসালটেন্টের পরামর্শ গ্রহণ করুন ।

৭. আপনার নিজের অর্জিত জ্ঞান, শিক্ষা, প্রশিক্ষণ ও কর্মের উপর ভিত্তি করে দেশে ও বিদেশে গ্রহণযোগ্য এমন একটি সিভি বা রেজুমি তৈরি করুন । প্রয়োজনীয় তথ্য দিয়ে একটি কভার লেটার লিখে ফেলুন । আপনি যদি কর্মরত বা প্রশিক্ষণরত থাকেন তাহলে কিছু ছবি তুলে রাখুন ও ছোট ছোট ভিড়িও করে রাখুন । প্রয়োজনে একজন বিজ্ঞ ব্যক্তির সহযোগিতা নিন । দেশে ও দেশের বাইরে নিয়োগ কর্তাদের নিকট প্রেরণ করুন ।

৮. আপনার জাতীয় পরিচয়পত্র থাকলে দেশের যে কোন একটি ভালো ব্যাংকে একটি একাউন্ট খুলে ফেলুন । অবশ্যই মনে রাখবেন আপনি যেন বিদেশ থেকেও আপনার ব্যাংকের লেনদেন ও হিসাব পর্যবেক্ষণ করতে পারেন । সব অর্থ পরিবার ও আত্মীয়-স্বজনের জন্য খরচ না করে নিজের জন্য কিছুটা সঞ্চয় করুন ।

৯. মাতৃভাষার পাশাপাশি একটি বিদেশী ভাষা শিখুন । অর্থাৎ আপনি যে দেশে কাজ করতে যেতে চান সেই দেশের ভাষা কিছুটা হলেও শিখে যাওয়ার চেষ্টা করুন । সারা দেশের বিভিন্ন কারিগরি প্রশিক্ষণ কেন্দ্রে সরকারি ও বেসরকারি ভাবে পেশাদার ভাষা শিক্ষা প্রশিক্ষণ কর্মসূচি চালু রয়েছে । আপনারা চাইলে আমাদের সাথে পরামর্শ করে কর্মপরিকল্পনা ঠিক করতে পারেন ।

১০. প্রবাসে যেহেতু আপনার জন্য খাবার রান্না করা ও কাপড় পরিস্কার করে দেয়ার মতো কেউ থাকবে না সেহেতু দেশে থাকা অবস্থায় শিখে যাওয়ার চেষ্টা করবেন ।

. প্রবাসী শ্রমিক হিসেবে যে কোন দেশে যাওয়ার পূর্বে সেই দেশের আইন, বিধি-নিষেধ, খাদ্যাভ্যাস, বাসস্থান, আবহাওয়া ও পরিবেশ সম্পর্কে জেনে নিন । ইন্টারনেট বা ইউটিউব থেকেও অনেক কিছু নিতে পারেন । পরামর্শ ও সেবা দিতে আমরা আছি আপনাদের পাশে ।

Click here Training

হটলাইন:
⏱ 01866-002648
⏱ 01723-479730
⏱ +4915212474661 (Germany)

Email:
riminiedutourbd@gmail.com
korazonberlin@web.de

1 Comments

Post a Comment

Previous Post Next Post