🌴আমাদের সার্বিক সহযোগিতায় আজ পর্যন্ত যারা ইউরোপের বিভিন্ন দেশে গিয়েছেন তাদের মধ্যে সবচেয়ে সহজ সরল মানুষটির নাম মোঃ সেলিম মিয়া । তাকে নিয়ে বলার মতো অনেক ঘটনাই রয়েছে । সবচেয়ে মজার বিষয় সে খুব আস্তে আস্তে কথা বলে এবং সে যা বলে তার ৬০ ভাগ কথাই আমরা বুঝতাম না । আমি এখনো তার অনেক কথাই বুঝি না । তাকে নিয়ে স্মৃতিচারণ করার পূর্বে তার জন্মজেলা ও ঠিকানা সম্পর্কে আপনাদেরকে জানাতে চাই । মোঃ সেলিম মিয়া মৌলভিবাজার জেলার রাজনগর উপজেলার কামারচক ইউনিয়নের হাটি করাইয়া গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন । তার বাবার নাম সোনা উল্লাহ ও মাতার নাম রহিমা বেগম । আপনারা যারা মৌলভিবাজার জেলায় জন্মগ্রহণ করেছেন তারা একটু খোঁজ নিলেই তার সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে পারবেন । তিনি ২০১৯ সালে আমাদের সহযোগিতায় একজন ওয়েল্ডার হিসেবে ইউরোপের সেনজেনভূক্ত দেশ পোল্যান্ডে যাওয়ার সুযোগ পান । ইতোমধ্যে তিনি পোল্যান্ডের রেসিডেন্সি কার্ড পেয়েছেন ও দুইবার বাংলাদেশ থেকে ঘুরে গিয়েছেন । প্রথমবার দেশে এসে বিয়েও করেছেন । ২০১৭ সালে আমরা তার ফাইলটি জমা নিয়েছিলাম । কিন্তু প্রথমবার ওয়ার্ক পারমিট এনেও ভারত থেকে ভিসা করতে ব্যর্থ হই । অনেক টাকা খরচ করে পোল্যান্ড ভিএফএস থেকে অ্যাপয়েন্টমেন্ট ডেট সংগ্রহ করেও ভিসা পাই নি । ভিসা না হওয়ায় কম্পানি রীতিমত হতাশা প্রকাশ করেছিল । কম্পানি থেকে পুনরায় ওয়ার্ক পারমিট গুলো রিনিউ করে নিয়ে আসা হয় । এমনকি কম্পানির মালিক নিজে ভারতে আসেন ও পোল্যান্ড দূতাবাসে অ্যাপয়েন্টমেন্ট নিয়ে কথা বলেন । দূতাবাসের কর্মকর্তারা তাকে বিভিন্ন সমস্যার কথা জানান । দূতাবাস কেন বাংলাদেশি নাগরিকদের ভিসা গুলো ইসু করছে না তা বিস্তারিত তুলেও ধরেন । কম্পানির মালিক সবাইকে দেশে ফিরে যেতে বলেন । অবশেষে আমরা সবাইকে নিয়ে দেশে ফিরে আসি । পরবর্তীতে কম্পানির পরামর্শে আমরা ইন্দোনেশিয়া থেকে আবেদন করার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করি । কম্পানি সর্বাত্মক সহযোগিতা করার আশ্বাস প্রদান করে । প্রথমে ৫ জন আমাদের প্রস্তাবে সমর্থন প্রদান করে । আমরাও সবার সমর্থন পেয়ে নতুন উদ্যমে কাজ শুরু করি । সবার ইন্দোনেশিয়া ভিসার আবেদন করি । আমরা ভিসা পেয়ে ইন্দোনেশিয়া উদ্দেশ্যে যাত্রা শুরু করি । সেখানে একটি কম্পানির সহযোগিতায় ভিসার ক্যাটাগরি পরিবর্তন করি । আঙ্গুলের ছাপ দেয়ার পর ভিসা অন-লাইন সম্পন্ন হয় । সকল সমস্যা সমাধান করে পোল্যান্ড দূতাবাস থেকে আমরা সবার অ্যাপয়েন্টমেন্ট ডেট সংগ্রহ করি । নিদিষ্ট দিনে আমরা তাদের নিয়ে গিয়ে দূতাবাসে ফাইল জমা করি । ২৫ দিন পর আমরা ভিসা সহ পাসপোর্ট গুলো ফেরত পাই । প্রথম ভিসা পাওয়া দুইজনের মধ্যে ছিলেন মোঃ সেলিম মিয়া । ভিসা পাওয়ার পর তার চোখে জল চলে আসে । দীর্ঘদিন সংগ্রামের পর সফলতা পেয়ে সবাই আবেগ আপ্লুত হয়ে পড়ে । এবার দেশে ফিরে শুরু হয় ম্যানপাওয়ার নামক আরেক সংগ্রাম । সকল জটিলতা পদদলিত করে ম্যানপাওয়ার কার্ড হাতে পাই আমরা ।
অবশেষে ২০১৯ সালের ২৬ এপ্রিল মোঃ সেলিম মিয়ার এয়ার টিকিট ইসু করা হয় । তার্কিশ এয়ারলাইন্সের টিকিট ইসু করা হয়েছিল । বোর্ডিং কাউন্টারে যাওয়ার পর তাকে বসিয়ে রাখা হয় । তার ভিসা কপি পরীক্ষা করে তার্কিশ এয়ারলাইন্স বোর্ডিং কার্ড প্রদান করে । সন্ধ্যাবেলা বাকিদের সাথে মোঃ সেলিম মিয়া পোল্যান্ডের ওয়ার্স বিমানবন্দরে পৌছে । কম্পানি থেকে একজন তাদেরকে রিসিভ করে হোটেলে নিয়ে যায় ও থাকার ব্যবস্থা করে । আন্তরিকতা ও ভালোবাসার কারণে এখনো সবার সাথে আমাদের যোগাযোগ অব্যাহত রয়েছে । যে কেউ দেশে আসলেই আমাদের সাথে যোগাযোগ করে । অনেকেই বিমানবন্দরে যাওয়ার সময় দেখা করে । আপনারা যারা ভবিষ্যতে ইউরোপ সহ বিভিন্ন দেশে যাবেন অবশ্যই টেকনিক্যাল কাজ শিখে যাবেন । কাজ না জানলে কোন প্রতিষ্ঠান আপনাকে রেসিডেন্সি কার্ড করে দিবে না । আর বৈধভাবে গিয়েও যদি কাগজপত্র না করতে পারেন তাহলে আজ অথবা কাল দেশে ফিরে আসতে হবে । সম্প্রতি ইতালি, গ্রীস ও মাল্টা থেকে বেশ কয়েকজন বাংলাদেশী অভিবাসন প্রত্যাশী দেশে ফিরে এসেছেন । তাই আপনারা অবৈধপথে ইউরোপে যাওয়া থেকে বিরত থাকবেন । পরামর্শের জন্য আমাদেরকে ফোন করতে পারেন ও মেইল করতে পারেন । আপনাদের সবার জন্য শুভেচ্ছা ও দোয়া ।
হটলাইন:
⏱ 01866-002648
⏱ 01723-479730
⏱ +4915212474661 (Germany)
Email:
riminiedutourbd@gmail.com
korazonberlin@web.de


Post a Comment